বঙ্গদেশ ডেস্ক: ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর ইঞ্জিনীয়াররা বৃহস্পতিবার গালওয়ান নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণ সমাপ্ত করেছে। এই সেতুটি প্রায় ৬০ মিটার দীর্ঘ। সেতুটি যে প্যাট্রলিং পয়েণ্ট ১৪ থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার পশ্চিমে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে এই সপ্তাহের ১৫ই জুন চীনা ও ভারতের সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ এই প্যাট্রলিং পয়েণ্ট ১৪তেই হয়েছে।
এই সেতুনির্মাণের সমাপ্তির ফলে পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সৈন্যদের সামরিক শক্তি উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেল। কেবল যে ভারতীয় সৈন্যরা হিমশীতল গালওয়ান নদী পারাপারে সক্ষম হল তাই নয়, উপরন্তু দারবুক থেকে কারাকোরাম (দৌলত বেগ ওল্ডি) পর্যন্ত বিস্তৃত ২৫৫-কিলোমিটার দীর্ঘ পথের রক্ষণেও বলীয়ান হল। ফলে চীনা সৈন্যদের সঙ্গে পূর্ব পূর্ব যুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের পূর্বে যে প্রতিকূলতার সামনে পড়তে হয়েছিল, তার অবসান হল।
মনে করা হচ্ছে যে এই সেতুনির্মাণ রুখতেই চীনা সৈন্যবাহিনী সমস্যা সৃষ্টি করতে উদ্যোগী হয়েছিল। চীন এক অতিরঞ্জিত দাবী করেছিল যে সমগ্র গালওয়ান উপত্যকাই তাদের যাতে চীন দারবুক থেকে কারাকোরাম পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তাটি বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। এই সেতুনির্মাণের ফলে তাদের সেই শক্তি সমূহ হ্রাস প্রাপ্ত হল। পূর্বে একটি ফুটব্রিজ এই স্থানে ছিল। এখন চার লেনের এক প্রশস্ত সেতুনির্মাণের ফলে ভারতীয় সেনা তাদের রসদ এবং যুদ্ধসরঞ্জাম সহজেই দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে। এক উচ্চপদস্থ সামরিক মুখপত্র জানাচ্ছেন যে চরম চ্যালেঞ্জের মুখেও তাঁরা সেতু নির্মাণের কাজ বজায় রেখেছিলেন।
ভারত ১৯৬২ সালে জওহরলাল নেহরুর প্রধানমন্ত্রিত্বে চীনের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়। এরপর একাধিক সংঘর্ষ ঘটলেও ভারত আপন সীমান্ত অটুট রেখেছে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ চীন ভারত সীমান্তটি লাইন অফ একচুয়াল কন্ট্রোল (LAC) নামে খ্যাত। এই সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীন উভয়পক্ষের মতপার্থক্য আছে। তাই কিছু স্থান উভয়েই আপনার বলে দাবী করে। সাধারণতঃ এইসব স্থানে দুপক্ষই প্রহরা দেয় কিন্তু কেউ কোন পাকাপাকি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করে না। যদিও ভারত বহুবার সীমান্তটি নির্দিষ্ট করার দাবী জানিয়েছে, কিন্তু চীন তাতে কিছুতেই রাজি হয় নি। চীনের দাবীগুলিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়। যেমন সমগ্র গালওয়ান উপত্যকা কোনদিনই এবারের সংঘাতের আগে তারা দাবী করে নি।