হিন্দুধর্মের সাংবিধানিক পরাধীনতা : সমান অধিকারের জন্য হিন্দুদের আর্তি

0
2602

 

  • এম নাগেশ্বর রাও

আজকের পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, ভারতবর্ষে সংখ্যালঘু হবার সুবাদে হিন্দুদের ধর্ম, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সমান অধিকার নেই

তাঁরা অধিক অধিকারের দাবি জানায় না হিন্দুরা কেবলমাত্র অন্য সকল সংখ্যালঘুরা যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে, শুধু সেটুকুর জন্য আর্তি জানান

 

 

ভারতবর্ষ একটি অভিনব দেশ। এই দেশটিকে যা একেবারে আশ্চর্য রকমের অনন্য করে তোলে, তা হল যে এদেশের সংবিধান সংখ্যালঘু অ-হিন্দুদের যে সকল অধিকারগুলি প্রদান করেছে, সেগুলিই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশীয় জাতি হিন্দুদের প্রদান করতে অস্বীকার করে।এটি হিন্দুদের বহুযুগ পুরাতন দেশ যা তাঁদের পৈতৃক ভূমির বিশ্বাসযোগ্য বিভাজনের পরে তাঁরা পেয়েছেন, সেখানে এটি তাঁদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করে।

কোনো সন্দেহ নেই যে হিন্দুদের পূর্ণ রাজনৈতিক অধিকার আছে। কিন্তু তাঁরা সংখ্যালঘুদের মত নন, তাঁদের নিজেদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলি রাজ্যের অহেতুক হস্তক্ষেপ ব্যতিরেকে চালানোর কোনো স্বাধীনতা নেই; তাঁদের সভ্যতার জ্ঞান এবং প্রাচীন লিপিগুলি জনশিক্ষায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে; তাঁদের অ-ধর্মান্তরিত ধর্মগুলি এবং অন্যান্য সকল কিছুর মধ্যে একটি মিথ্যা সমতা তৈরি করে তাঁদের কথোপকথনের নামে উপহাস করা হচ্ছে; তাঁরা সংখ্যালঘুদের মত নন, তাঁদের নিজেদের মন্দির ও ধর্মীয় সম্পত্তিগুলিকেও রক্ষা করার অধিকারটিকে অস্বীকার করা হয়;তাঁরা সংখ্যালঘুদের মত নন, রাজ্যের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ ছাড়া তাঁদের বংশগত ঐতিহ্যগুলি উদযাপন করা বা সেগুলিকে বিস্মৃতির অতল অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করার কোনো স্বাধীনতা তাঁদের নেই। এটিই ধর্ম, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিগত দিক থেকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে অসাম্য ও বৈষম্যের একটি সংক্ষিপ্ত আকার।

প্রাচীন সভ্যতার লিপিগুলি জনশিক্ষার মাধ্যমে পঠন-পাঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে হিন্দু ছাত্রছাত্রীরা হিন্দুধর্ম ও তাঁদের প্রাচীন সভ্যতার উত্তরাধিকার সম্পর্কে কিছুই শিখতে পারছে না। এর বিপরীতে, জনশিক্ষাকে এমন ভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে, যাতে হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মগজধোলাই করে তাদের স্ব-ইচ্ছায় নিজের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে ঘৃণা করতে শেখানো যায়। যে সব বিশ্বাসঘাতক যুবা ‘ভারত তেরে টুকরে টুকরে হোঙ্গে’-র মত স্লোগান দেয়, তারাই হিন্দুবিরোধী জনশিক্ষার ফসল।

সংবিধান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘিষ্ঠদের মধ্যে মিথ্যা অথচ ভয়াবহ বিভাজন সৃষ্টি করে তাঁরা আমাদের সমাজটিকে একপ্রকার বিষিয়ে দিয়েছেন। কপট ছল করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে হিন্দুরা যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই তাঁরা সংখ্যালঘিষ্ঠদের জন্য একটি অভিশাপ। আর তাই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ অর্থাৎ হিন্দুদের ব্যতিরেকে সংখ্যালঘুদের কিছু বিশেষ অধিকার ও অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।এরকম অত্যাশ্চর্য রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতার নিদর্শন কোথাও নেই অথবা এমন কোনো ঘটনা বিশ্বের কোথাও ঘটবার নজির নেই।এটি অত্যন্ত ভ্রান্ত। হিন্দুধর্ম একটি অ-প্রসারণবাদী, অ-ধর্মান্তরণবাদী দেশীয় জাতি, যেখানে ধর্মান্তরণবাদী, সম্প্রসারণবাদী জাতিগুলি আবহমানকাল ধরে চুপিসাড়ে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করে চলেছে। একপাল ভেড়া নেকড়ের দিকে তেড়ে যাচ্ছে? না নেকড়েটি ভেড়াদের দিকে তেড়ে আসছে? কার সুরক্ষার বেশি প্রয়োজন? একপাল ভেড়া (শিকার) অথবা শিকারী নেকড়ের?

সংবিধানের ২৫-৩০ নং অনুচ্ছেদটি ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষাগত অধিকার এবং স্বাধীনতা বিষয়ক আলোচনা করে। হিন্দুদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক পরাধীনতার বিশালতা অনুভব করার জন্য এই সংবিধানিক ধারাগুলি কীভাবে কার্যকর হয়,  তা পরীক্ষা করা উচিত এবং তার জন্য আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

২৫ নং অনুচ্ছেদ ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা সুনিশ্চিত করে। এর সাধারণতঃ তিনটি উপাদান আছে – পেশা, অনুশীলন ও ধর্মের প্রসার। আসুন আমরা দেখি, এই তিনটি দৃষ্টিভঙ্গি হিন্দুদের ক্ষেত্রে ঠিক কীভাবে কাজ করে।

প্রকাশ্যে হিন্দু ধর্মকে স্বীকার করার স্বাধীনতা

দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে যেখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে, এরকম অসংখ্য জায়গায় হিন্দুদের ক্ষেত্রে এই আইন ভঙ্গের অনেক নিদর্শন লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু গণমাধ্যম এগুলিকে একেবারেই প্রকাশ্যে আনে না। যাইহোক, দেশের নানা অঞ্চলে হিন্দুদের উপর অকথ্য নিপীড়নের একটি প্রতিনিধিস্থানীয় উদাহরণ হল কাশ্মীর,  যেখানে তাঁদের জনসংখ্যাগত ভারসাম্যটি একেবারে ভেঙে পড়েছে।

কাশ্মীর, কাশ্মীরি হিন্দুদের বাসস্থান এবং সভ্যতার প্রায় ঊষালগ্ন থেকে তাই হয়ে আসছে। কিন্তু কালক্রমে তাঁরা সেখানে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েন। এর ফলস্বরূপ প্রায় ৩০ বছর আগে কাশ্মীরে লক্ষ লক্ষ হিন্দুকে ধর্মীয় শুদ্ধিকরণের নামে গণহত্যা করা হয়। তাঁদের কী দোষ ছিল? হিন্দুধর্মকে প্রকাশ্যে স্বীকার করা! কেন তাঁরা সুরক্ষিত ছিলেন না? এর কি এটাই কারণ যে তাঁরা হিন্দু ছিলেন?

গুজরাটের গোধরায় দাঙ্গা-পরবর্তী সময়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি, সংবিধানের স্ব-ঘোষিত অভিভাবকেরা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীর লোকজন যেরকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন এবং ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন, তার এক শতাংশও যদি তাঁরা এক্ষেত্রে করতে পারতেন, তবে কাশ্মীরি হিন্দুদের উপর হওয়া এই গণ অত্যাচার ও নিপীড়নকে প্রতিহত করা যেত।কাশ্মীরি হিন্দুদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় জাতীয় লজ্জা। বস্তুত, নাজির ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্বের যে কোনো জায়গায় আমরা একটি বধির কান ও একটি অন্ধ চোখে পরিণত হয়েছি। শতাব্দীর প্রায় এক চতুর্থাংশ কেটে যাওয়ার পরেও আমাদের নীরবতাই থেকে গেছে। স্বভাবতই হিন্দুদের মনে প্রশ্ন জাগে যে হিন্দুরা যে সকল অঞ্চলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে, সেখানে হিন্দু ধর্মকে প্রকাশ্যে স্বীকার করার স্বাধীনতা প্রদান করার কি এইরকম অঙ্গীকার করেছিল সংবিধান?

হিন্দুধর্ম অনুশীলনের স্বাধীনতা

হিন্দুদের ধর্মীয় অনুশীলনে কিছু বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এবং শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বিশেষ করে হিন্দুদের জন্য ব্যক্তিগত আইন জারি করে এবং একটি অভিন্ন ন্যায়সংহিতার ৪৪ নং অনুচ্ছেদের সাংবিধানিক নির্দেশাবলীকে অগ্রাহ্য করে রীতিমত হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে; হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাসগুলিকে কুসংস্কার হিসেবে অপরাধ হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে অথচ, অ-হিন্দু ধর্মমতগুলি ও সহস্র ‘নিরাময় ও প্রার্থনা মিশন’-গুলি যে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করছে, তা তাঁদের কাছে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত; তাঁরা অগ্রহার, আনন্দ মার্গ অবলম্বনকারী এবং অন্যান্য তান্ত্রিকদের উত্যক্ত করেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেন; তাঁরা হিন্দুদের নিজেদের ধর্মীয় ঐতিহ্য ও উৎসবগুলি উদযাপন করাকে আইনত নিষিদ্ধ করে, বাধা প্রদান করে এবং নিরুৎসাহিত করে – ঠিক যেমন তাঁরা শবরীমালা, শনি মন্দির, জাল্লিকাট্টু, কাম্বালা, দীপাবলী এবং দোল উৎসবের ক্ষেত্রে করে থাকে।

যদি কোনো প্রাণীহত্যাকে খারাপ বলে গণ্য করা হয়, তবে যে কোনো ঘটনা বা উদ্দেশ্য নির্বিশেষে তাকে একই ভাবে খারাপই বলে ধরা উচিত। তা সে কোনো দেবতার সামনেই হত্যা করা হোক অথবা উৎসবের সময় বা খাদ্যের জন্যই হোক – এসবে কি সত্যিই কিছু যায় আসে? কিন্তু আমাদের সংবেদনশীলতা ও জুলুম কেবলমাত্র কিছু হিন্দু উৎসব চলাকালীন মাঝেমধ্যে প্রাণীহত্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ যেখানে মানুষ ও পশুর একটি যুগ্ম ও অচ্ছেদ্য ভূমিকা আছে।

এখন অপর একটি বিষয় আলোচনা করা যাক – মাংস রপ্তানি নিয়ে। সংবিধানের ৪৮ নং অনুচ্ছেদ যে কোনো দুগ্ধবতী পশুর হত্যা করা ও গবাদি পশুর হত্যা করা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। তথাপি প্রচুর সরকারী ইন্সেন্টিভ এবং সরকারী নীতিগুলি ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাংস রপ্তানিকারকে পরিণত করেছে যার জন্য প্রতি বছর প্রায় তিন কোটি গবাদি পশুর হত্যা করা হয়। একটি অভূতপূর্ব প্রাণী-নিষ্ঠুরতার কথা ভারতীয় ইতিহাসের কাহিনীতে এখনো অজানা এবং তাও আবার করা হয়েছিল বিদেশীদের ভরণপোষণ করার জন্য এবং আরো কিছু  রক্তমাখা টাকা রোজগার করার জন্য! ইহা কি একটি লজ্জা নাকি একটি সাফল্য? আবার এর বিপরীতে, হিন্দু দেবতার সম্মুখে কিছু বিক্ষিপ্তভাবে পশু বলিও নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে অথবা হিন্দুদের এর জন্য ধিক্কার জানানো হয়েছে। এটা কি হিন্দুদের ধর্মীয় অধিকারকে অস্বীকার করে চক্রান্ত করে বৈষম্য সৃষ্টি করা নয়?

এভাবেই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি হিন্দুদের প্রাচীন ধর্মীয় আচার-বিচারগুলিকে আইনত নিষিদ্ধ করে দেয় এবং তাঁদের নিজস্ব ধর্মনিরপেক্ষ উদ্ভট খামখেয়ালিপনাকে আমাদের হিন্দু ধর্মের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে চাপিয়ে দিতে থাকেন। তাই হিন্দুরা ন্যায়সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন করে যে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান, আসলে হিন্দুধর্ম সংস্কারের আড়ালে একে ধ্বংস করার বা বিকৃত করারই কোনো সনদ নয় তো?

ধর্মের প্রসারের স্বাধীনতা

গঠনগতভাবে সাধারণত দুই ধরণের ধর্ম আছে: অ-ভারতীয় উৎসের ধর্মগুলি যাঁরা অন্তর্ভুক্তিকরণ ও প্রসারণে বিশ্বাস করে এবং কোনো এক দৈব আদেশ অনুসারে সমস্ত বিশ্বকে তাঁদের ধর্মে দীক্ষিত করতে চায়। এবং অপর গোষ্ঠীর উৎস হল ভারতীয় যাঁরা অন্তর্ভুক্তিকরণ, অ-প্রসারণবাদী এবং তাঁরা অন্তরাত্মার অনুসন্ধান করেন। যেহেতু দেশীয় হিন্দুত্ববাদ অ-ধর্মান্তরণবাদী, তাই ধর্মের প্রসারের অধিকার আমাদের জন্য একটি অর্থহীন ব্যাপার। কোনো নিরামিষাহারীকে আমিষ খাবার খেতে দেবার মতই এটা একটা অর্থহীন ঘটনা। কিন্তু আবার এই একই প্রসারের অধিকার অন্যান্য ধর্মগুলিকে ভারতে দেশীয় হিন্দু, শিখ প্রভৃতিদের ধর্মান্তরিত করে তাঁদের উপর আগ্রাসন চালানোর জন্য আমন্ত্রণ জানায়।

একটি প্রকৃত অধিকার দুর্বলকে সমস্ত উপহাস, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ থেকে রক্ষা করে। নেকড়ে বাঘ ও ভেড়া উভয়কে একে অপরকে ভক্ষণ করতে দেওয়ার সমান স্বাধীনতা দেওয়া অত্যন্ত হাস্যকর। অনুরূপে, কোনো একজন ব্যক্তিকে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মাচরণের স্বাধীনতা প্রদান করা আর কোনো শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মান্তরণ, বস্তুত ধর্মীয় সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা, দেশীয় হিন্দু, শিখদের ধ্বংস করা ইত্যাদি সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন।

দেশীয় হিন্দুদের উপর এই সুবিশাল বৈষম্যের ফলস্বরূপ দেশজুড়ে ভারতীয় ধর্মগুলি জনসংখ্যাগত দিক থেকে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে হাজার হাজার গ্রামে, অসংখ্য জেলায় এবং কিছু কিছু রাজ্যে ভারতীয় ধর্মীয় জনঘনত্ব ইতিমধ্যেই শূন্যে নেমে এসেছে অথবা তাঁরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন। দেশীয় ভারতীয় ধর্মগুলিকে ধ্বংস করা এবং আমাদের প্রাচীন সভ্যতাগুলিকে ধ্বংস করাই কি ভারতের স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য ছিল? এর জন্যই কি লক্ষ লক্ষ মানুষ আত্মবলিদান দিয়েছিলেন?

সমগ্র বিশ্ব জুড়ে পরিকল্পনা মাফিক ধর্মীয় রূপান্তরকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়। কারণ এটিই রোমীয়, গ্রীক, মায়া, আজটেক, ইনকা এবং পারসিক প্রভৃতি সভ্যতার ধ্বংসের কারণ। এমনকি এটি অন্যান্য সভ্যতাগুলিকেও একটি প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। অতঃপর অধিকাংশ ইসলামীয় রাষ্ট্রগুলি, চীন এবং এমনকি গ্রীসেও ধর্মান্তরণকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গ্রীক সংবিধানের ১৩(২) অনুচ্ছেদ ধর্মান্তরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

হিন্দু মন্দিরগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ

২২ নং অনুচ্ছেদ সকল মানুষের নিজ নিজ ধর্মাচরণের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করে। কিন্তু আসল সত্যটা কী? প্রায় সমস্ত হিন্দু মন্দিরগুলিকে রাজ্য সরকার রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছে। দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ও রাজ্য সরকারের মন্দিরের উপর নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে মত পোষণ করে।

সংবিধানের ঘোষণার পর আশা করা হয়েছিল যে সরকার যে মন্দিরগুলি বাজেয়াপ্ত করেছিলেন সেগুলি তাঁরা হিন্দু সমাজকে প্রত্যর্পণ করবেন। বিচারব্যবস্থা এই নির্দেশও দিয়েছিলেন যে যদি কোনো বিশেষ বিশেষ মন্দিরে অব্যবস্থার অভিযোগ থাকে, একমাত্র তবেই সরকার ৩১ক(১)(খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে সেগুলিতে  সমস্ত কিছু পুনরায় স্বাভাবিক করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য হস্তক্ষেপ করতে পারেন। কিন্তু এ সমস্ত কিছুই ব্যর্থ। দেশীয় সরকার আরো বেশি করে হিন্দু মন্দিরগুলিকে ও তাদের সম্পত্তি রাষ্ট্র্বের তত্ত্বাবধানে আনতে থাকেন, যেখানে মসজিদ ও চার্চগুলির দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ধর্মাবলম্বীদেরই অর্পণ করা হয়েছিল। এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল – উত্তরাখণ্ড সরকার বর্তমানে ৫০টিরও বেশি চারধাম মন্দিরকে  রাষ্ট্রায়ত্ত করে নিয়েছেন।

হিন্দুধর্মের প্রাণ ও আত্মা হল এর মন্দিরগুলি। মন্দিরগুলি মানুষের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা, আত্ম-সংশোধন ও আত্মরক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা গড়ে তোলে এবং পুরোহিত শ্রেণি, শিল্পীবৃন্দ এবং  বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের রক্ষণাবেক্ষণ করে। এগুলি নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধি করেছিল দরিদ্র ও নিঃস্ব মানুষদের সাহায্য করার জন্য।  কিন্তু সরকার কর্তৃক এই রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হিন্দুধর্মকে সম্পূর্ণ পঙ্গু করে দিয়েছে।

অনুমান করা যায় যে প্রায় এক লক্ষেরও বেশি হিন্দু মন্দির, তাদের লক্ষ লক্ষ ভূমি, তাদের কয়েক লক্ষ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার বাৎসরিক আয় রাজ্য সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত করে নিয়েছেন। স্পষ্টত, আমাদের মন্দিরের অধিকার আমাদের দিতে অস্বীকার করায় ভারতে “সংখ্যাগরিষ্ঠ” হিন্দুদের অবস্থা,  কিছু কিছু ধর্মভিত্তিক দেশে ধিম্মি নামক সংখ্যালঘু জাতির থেকে আলাদা কিছু নয়। সম্পদ ও প্রতিষ্ঠান থেকে বঞ্চিত করায় হিন্দুধর্ম ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। স্পষ্টত, হিন্দুদের ধর্মীয় অধিকার বলে কিছু নেই এবং রাজ্যগুলি তাঁদের ইচ্ছেমত পদদলিত করতে পারে। আহা! ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য কতই না ধর্মীয় স্বাধীনতা!

গোষ্ঠীগত জনসম্পদ

 

২৭ নং অনুচ্ছেদ শর্তসাপেক্ষে বলে যে কোনো মানুষ কোনো কর প্রদানের জন্য বাধ্য থাকবেন না, এর অর্থ নির্দিষ্টভাবে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের প্রচার বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যয় পরিশোধে বিশেষভাবে বরাদ্দ করা হবে। তথাপি, ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের ব্যতিরেকে অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য বিভিন্ন বৃত্তি, ভর্তুকি, পন্থা, পরিকল্পনা, ঋণ এবং বাজেটের নানা সুবিধার ব্যবস্থা ধর্মনিরপেক্ষ জনসম্পদে রয়েছে। বস্তুত কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের সুবিধার জন্য কখনো কোনো কর বলপূর্বক আরোপ করা যায় না। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ করদাতাদের করের একাংশ সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা কি ২৭নং অনুচ্ছেদের বক্তব্যের পরিপন্থী নয়?

 

রাষ্ট্রের ধর্মীয় নিরপেক্ষতা ধর্মনিরপেক্ষতার একমাত্র নিদর্শন। তাই, একটি ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থায় সমস্ত আইন এবং জননীতিগুলিকে সমস্ত ধর্মকে উপেক্ষা করে গঠন করতে হয়। বলা বাহুল্য যে ধর্মভিত্তিক পরিকল্পনাগুলি যেকোনো দেশের জাতীয় স্বার্থের ক্ষতিসাধন করে যেহেতু যেহেতু তাঁরা দেশের জাতীয় ঐক্য ও অখণ্ডতাকে চূর্ণ করার জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থের প্রবণতাগুলিকে উস্কে দিয়ে পরিপূর্ণরূপে আঞ্চলিক পরিচয়টিকে প্রকট করে তুলতে চান।

 

অতঃপর, সমাজের সকলের কল্যাণের জন্য সুবিধাযোগ্য নির্বাচনের একমাত্র ভিত্তি হওয়া উচিত সামাজিক-অর্থনীতিক ক্ষেত্রগুলি।তথাপি, ব্যাপক সংখ্যক জনসম্পদ সম্পূর্ণভাবে সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে অথবা তাঁদের ধর্মীয় সত্তার উপর ভিত্তি করে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে যা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও অধর্মনিরপেক্ষ।

এরকম ভয়ানক গোষ্ঠীগত জনসম্পদ রাখার প্রভাব কী হতে পারে? একজন হিন্দু যিনি কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যালঘু যে সুবিধা পাচ্ছে, তা না পেয়ে থাকেন, তবে তিনি হঠাৎ করে প্রশ্ন করতে পারেন যে তিনি যদি ইসলাম বা খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে যান, তাহলে কি তিনি ওই সুবিধাগুলির জন্য  উপযুক্ত হিসাবে বিবেচিত হবেন? স্পষ্টত, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয় রাজ্যগুলি সক্রিয়ভাবে ধর্মনিরপেক্ষ জনসম্পদের অপব্যবহার করে হিন্দুদের ধর্মান্তরণে উৎসাহ প্রদান করে চলেছে।  এটা কি আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের কপটতা নয় যে এটি হিন্দুদের তাঁদের পিতৃপুরুষের ধর্ম থেকে দূরে সরিয়ে ভারতীয় রাজ্যগুলিকে ধর্মান্তরীকরণের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্রে পরিণত করেছে?

 

 

হিন্দুদের প্রাচীন লিপি শিক্ষা সভ্যতার জ্ঞান প্রদানে নিষেধাজ্ঞা

 

অনুচ্ছেদ নং ২৮ ধর্মীয় নির্দেশগুলিকে জনশিক্ষার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে না। একটি সভ্যতা ততদিনই টিকে থাকতে পারে যখন তাকে লালনপালন করার জন্য একটি ব্যবস্থা থাকবে।  ভারতীয় রাষ্ট্রটি আমাদের প্রাচীন সভ্যতার উত্তরাধিকারী এবং বিশ্বাসের বাহন যা মূলত হিন্দু ধর্মের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। লালনপালনের অর্থ  হল জনসাধারণের শিক্ষার মাধ্যমে সভ্যতার জ্ঞান এবং প্রাচীন গ্রন্থের শিক্ষার আলো আন্তঃ-প্রজন্মের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া, তাদের উৎসাহিত করা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।

 

আমাদের সভ্যতাটি বরাবর একটি জ্ঞানের উপর আধারিত সভ্যতা যার একটি বিপুল জ্ঞানের আধার রয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর নানা সাহিত্য রয়েছে। পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা পুরাতন গ্রন্থ ঋগ্বেদ এবং বিশ্বের  সর্বাপেক্ষা দীর্ঘ লিখিত মহাকাব্য –মহাভারত – এই দুটিও আমাদের সম্পদ। সে কোনো জাতি এরকম মহান ঐতিহ্যের জন্য অত্যন্ত গর্বিত বোধ করবে।

তথাপি, আমাদের প্রাচীন গ্রন্থগুলি যেমন- বেদ, উপনিষদ, মহাভারত, রামায়ণ প্রভৃতিকে ধর্মীয় গ্রন্থ বলে চিহ্নিত করে দিয়ে তাদের জনশিক্ষায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের জাতির জ্ঞান ও সত্তার একটি দৃঢ় ব্যুৎপত্তি আছে বলে কীভাবে সরকার হিন্দুদের সাংস্কৃতিক জ্ঞান ও সত্তাকে বর্জন করতে পারে ? যদি সভ্যতার এই গ্রন্থগুলি ধর্মীয়ও হয়, তবে তাদের জনশিক্ষা হিসাবে রাখতে কী দোষ আছে? যদি ধর্ম এতই খারাপ, তবে তাদের নিষিদ্ধ করছেন না কেন? একদিকে ধর্মাচরণের স্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছে এবং অপরদিকে সেগুলিকে জনশিক্ষার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হল – এটা কি দ্বিচারিতা নয়?

 

প্রকৃতপক্ষে এটি একটি যন্ত্রণাদায়ক ছদ্মবেশ যা ২৮নং অনুচ্ছেদের সঙ্গে ২৯-৩০ অনুচ্ছেদ একসঙ্গে পাঠ করলে সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়, যেখানে সংখ্যালঘুদের তাদের শিক্ষামুলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে তাদের ধর্ম ও সংস্কৃতির পাঠ দেওয়ার জন্য বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেবল হিন্দু গ্রন্থ এবং জ্ঞানকেই শিক্ষার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াকে নিষিদ্ধ করা হল, কিন্তু অপরগুলিকে কিন্তু এমন করা হয়নি। এটিকে হিন্দুধর্মের জনশিক্ষার মাধ্যমে প্রাচীন গ্রন্থ এবং ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সভ্যতার জ্ঞানগুলিতে হিন্দুদের  প্রবেশাধিকার অস্বীকার করে হিন্দুধর্মকে ধ্বংস করার একটি ন্যক্কারজনক প্রকল্প বলে বোধ হয়।

 

হিন্দুদের সাংস্কৃতিক অধিকার অস্বীকার

অনুচ্ছেদ নং ২৯ সকলকে তাঁদের ভাষা, লিপি অথবা সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করার সাংস্কৃতিক অধিকার প্রদান করেছে। যাইহোক,  তবে ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটির  শিরোনামটি তার গঠন এবং ‘সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত অধিকার’ শীর্ষক অংশটিকে সমর্থন করে না। এই জাতীয় দ্বিচারিতা এটা স্বীকার করতে বাধ্য করে যে কেবল সংখ্যালঘুদের সাংস্কৃতিক অধিকারের নিশ্চয়তা আছে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের তা নেই।

বহুধাবিভক্ত হিন্দু সমাজের শিক্ষাগত অধিকারকে অস্বীকার : অনুচ্ছেদ নং ৩০ সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের বাদ দিয়ে সমস্ত সংখ্যালঘুদের শিক্ষাগত অধিকার প্রদান করেছে। ফলস্বরূপ, অপ্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ হিন্দু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতাকে দুর্বল করে দেয়, যেখানে ৩০ নং অনুচ্ছেদ কিন্তু সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলিকে সুরক্ষা প্রদান করে।
৯৩ তম সাংবিধানিক সংশোধনী এবং শিক্ষার অধিকার আইনের সাম্প্রদায়িক প্রয়োগের ফলে হিন্দু প্রতিষ্ঠানগুলির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় স্বৈরাচার থেকে বাঁচার জন্য হিন্দু সমাজের কিছু অংশ পৃথক ধর্মের মর্যাদা দাবি করে আসছে যাতে তাঁরা সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ শিক্ষাগত অধিকার পেতে পারেন।

 

এই বঞ্চিত হবার ব্যাপকতাকে অনুধাবন করে সৈয়দ শাহবুদ্দিন লোকসভায় অনুচ্ছেদ নং ৩০ এর সংশোধন করে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের সমান অধিকার পাইয়ে দেওয়ার জন্য একটি ব্যক্তিগত সদ্যসের বিধি (১৯৯৫ এর ২৬ নং, বর্তমানে অনুপস্থিত) উত্থাপন করেছিলেন।

সংখ্যাগরিষ্ঠ অথবা সংখ্যালঘিষ্ঠ- উভয় গোষ্ঠীরই তাঁদের নিজেদের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সেগুলিকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষাটি অত্যন্ত সাধারণ এবং বৈধ। অযৌক্তিক রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ছাড়াই হিন্দুদের তাঁদের পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার অধিকার অস্বীকার করা যে হিন্দুদের কেবল তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য  থেকে বিচ্যুত করছে তা নয়, বরং হিন্দু সমাজের খণ্ডিতকরণকে ইন্ধন জুগিয়ে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন

 

মহাশয়, আপনি নিশ্চিতভাবেই আমাদের সভ্যতার একজন অত্যন্ত ধার্মিক প্রধানমন্ত্রী। জনগণ আপনাকে পুনরায় বিশ্বাস করে ক্ষমতায় এনেছেন যে আপনি অবশ্যই আমাদের প্রাচীন সভ্যতার রক্ষণ করবেন ও তার প্রচার করবেন। সংবিধানের ২৫-৩০ নং অনুচ্ছেদের সংশোধনের মাধ্যমে যেভাবে পরাধীন করে রাখা হয়েছে, তা থেকে হিন্দুধর্মকে মুক্তি প্রদান করার জন্য ও হিন্দুদের অন্যান্য  সংখ্যালঘুদের মতই সমান অধিকার প্রদান করার গুরুদায়িত্ব আপনার উপরেই  অর্পিত হয়েছে।

 

মহাশয়, হিন্দুরা কখনই বেশি বেশি অধিকার চান না। তাঁরা দেশের সকল সংখ্যালঘুদের জন্য সমান অধিকার আছে অর্থাৎ যা ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের নিদর্শন, সেটুকুই পাবার আর্তি জানান।  শুধুমাত্র এই একটি কাজের জন্য আপনি ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নেতা হিসেবে পূজিত হতে পারেন।

অবসরপ্রাপ্ত আই পি এস অফিসার এম নাগেশ্বর রাওয়ের মূল লেখাটি স্বরাজ্য পত্রিকায় প্রকাশিত। অনুবাদ করেছেন অঙ্কুশা।