শিশুধর্ষণের চেষ্টাকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ায় অভিযুক্ত লিবেরালরা

0
637

বঙ্গদেশ ডেস্ক: আকলাখ সালামি কেসে সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে উস্কে দিয়ে সত্য ঘটনা আড়াল করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠছে সেক্যুলার লিবেরাল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

বেশ কিছুদিন ধরে লিবারেলরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করছে ২৮ বছর বয়সী আকলাখ সালামি নামে এক ব্যক্তি একটি ঘৃণ্য অপরাধের শিকার হয়েছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, সালামির হাত কেটে নেওয়া হয়েছে কারণ তার হাতে ৭৮৬ ট্যাটু আঁকা ছিল। এটি ইসলামে ‘বিসমিল্লাহ’ শব্দের সমতুল্য। ঘটনাটি ২০২০ সালের ২৩ শে আগস্ট হরিয়ানার পানিপথে ঘটেছিল। রেলের ট্রাকের কাছে আকলাখকে আহত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রাক্তন সাংবাদিক ইরেনা আকবর দাবি করেছেন আকলাখের ওপর ঘৃণ্য অপরাধ চালানো হয়েছে। এবং এই বিষয়ে সকলেই মুখে কুলুপ এঁটেছে।

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর শ্বশুরবাড়ির তরফের এক আত্মীয় তহসিন পুনাওয়ালাও আকলাখের ভাইয়ের ব্যাংকে ডিটেলস শেয়ার করে ফান্ডিং করতে শুরু করেন। ফান্ডিংয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ট্যুইট‌ও করতে শুরু করে‌ন।

কেরালার একটি ওয়েবসাইট, মাকতুব মিডিয়া প্রথম দাবি করতে শুরু করে ৭৮৬ ট্যাটু করার জন্য হাত কেটে নেওয়া হয়েছে আকলাখের। এই মিডিয়া এর আগে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া গ্রন্থাগারের সিএএ দাঙ্গা বিরোধী ভিডিও লিক করেছিল। কংগ্রেস নেতা সালমান নিজামী, যিনি সম্প্রতি ফেক নিউজ কাণ্ডে ধরা পড়েছিলেন তিনিও এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং এক‌ই দাবি করেছেন।

দ্য ওয়্যার‌ মিডিয়াও একজন মুসলিম ব্যক্তি ৭৮৬ ট্যাটু করার জন্য ঘৃণ্য অপরাধের শিকার হয়েছেন শিরোনামে খবর প্রকাশ করে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও সত্য ঘটনা চাপা দিয়ে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে।

কী সেই সত্য ঘটনা? দ্য কুইয়েন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক নাবালক শিশুর পরিবার অভিযোগ করেছে তারা যখন রেললাইনের ধারে নিজেদের বাড়িতে বারান্দায় ঘুমাচ্ছিল, তখন তারা হঠাৎ লক্ষ্য করে বাচ্চাটি নিখোঁজ। খোঁজাখুঁজি করতে করতে পাশের একটি পার্কে পৌঁছলে আকলাখের সঙ্গে শিশুটিকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখা যায়। লোকজন দেখে আকলাখ রেললাইনের ধার ধরে ছুটে পালানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, আকলাখ জোর করে শিশুটির মুখে তার গোপনাঙ্গ ঢোকানোর চেষ্টা করে।

পানিপথের এসিপি সতীশ কুমার ভ্যাটস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে আখালাকের বিরুদ্ধে একটি নাবালক শিশুকে অপহরণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে। শিশুটির কাকা জানিয়েছেন বাচ্চাটির দুটি দাঁত ভেঙে গিয়েছে এবং তার শরীরে যৌন হয়রানির চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ জানায়, আকলাখ রেললাইন ধরে পালিয়ে যাওয়ার সময় আহত হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে অভিযুক্তের ভাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিগুলি শেয়ার করেছে এবং সমগ্র ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক অ্যাঙ্গেল থেকে বর্ণনা করছে।

উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একটি বাচ্চাটির পরিবার থেকে দায়ের করা হয়েছে এবং অন্যটি আকলাখের ভাইয়ের পক্ষ থেকে। আকলাখের ভাইয়ের অভিযোগ, শুধুমাত্র মুসলিম পরিচয়ের কারণেই তার ভাইকে আক্রমণ করা হয়েছিল।

রেলওয়ে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩২৬, ৩৪ নম্বর ধারার আওতায় আকলাখের অভিযোগের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেছে। এদিকে, বাচ্চাটির পরিবার পানীপথের চাঁদনীবাগ থানায় পকসো আইনের ৬ এবং ১৪৪ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে।