দেবীর হাতে দেবীর মূর্তি, শক্তিরূপী নারীই বাঙালী হিন্দুর আদর্শ

0
584

বঙ্গদেশ ডেস্ক : দুর্গার আরাধনায় মাতে বাংলা , আর বাঙালির হাত ধরে দেবী দুর্গার আগমনের সুরে মেতে ওঠে ভারতবর্ষ সহ সারা বিশ্ব। দেবী শুধু রূপে মোহিত করে মাতৃ রূপেই ধরা দেননি, তিনি অস্ত্র হতে অসুর নিবারণ করেছেন।বাংলার নারী শক্তি সেই দেবীরই আরেক রূপ। কোথায় বলে যে রাঁধে সে চুল ও বাঁধে।

পুরাতন মালদার ব্লকের মুচিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন যমুনা দেবী। দুই দশক আগে পুরাতন মালদার পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড এর কদমতলা এলাকার বাসিন্দা অনিল সরকারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তার পর থেকেই গৃহ কর্মের পাশাপাশি স্বামীর দেখা দেখি প্রতিমা তৈরিতে আগ্রহ তৈরি হয় তার।

স্ত্রী এর আগ্রহ দেখে স্বামী ও তাকে শেখা তে শুরু করেন প্রতিমা গড়ার কাজ। ধীরে ধীরে ছোট ছোট প্রতিমা গড়তে লাগলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতা অর্জনের পর এখন দুর্গা কালি গণেশ সহ সব ধরনের মূর্তি বানান তিনি। তার কথায় ” বিয়ের পর থেকে আগ্রহ জন্মায় এই কাজে। আমার স্বামী আমকে হাতে ধরে সেখান সব কিছু। অনেক জায়গা থেকেই আসে প্রতিমা গড়ার কাজ, এ বছর একটু কম এসেছে কাজ। বাড়ির কাজের পাশা পাসি এই কাজ করতে খুব ভালো লাগে, আরো অনেক কে শেখাতে চাই। কিন্তু খুব খাটনির কাজ বলে সেভাবে কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেনি” ।

স্বামী অনিল বলেন, ” বিয়ের পর থেকেই দেখতম প্রতিমা গড়ার ব্যাপারে ওর আগ্রহ, তারপর থেকে ওকে হাতে ধরে মূর্তি গড়ার কাজ শেখানো শুরু করি । নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং প্রতিভার দ্বারা খুব দ্রুত ও এই কাজে দক্ষ হয়ে ওঠে”।

বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রাস্তার ধারে রসুলপুর এলাকায় ছোট্ট একটা কারখানা রয়েছে অনিল সরকারের। সেখানেই মৃৎশিলপী যমুনা দেবী দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন। এবছর পাঁচটি দুর্গা প্রতিমার বরাত পেতেছেন তিনি। প্রতিমার কাজ প্রায় শেষের দিকে।

প্রতিমা তৈরির ফাঁকে যমুনা দেবী বলেন , এভাবেই সাবলম্বী হলে কোনো গরিব মে বউ কে আর্থিক সংকটে পড়তে হবে না। মে রা নিজেরা উপার্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। এরকম দুস্থ মে দের পাশে দাড়াতে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করে কাজ শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। নিজের প্রতিভা ও কারিগরি জ্ঞানের মাধ্যমে আলো ছড়াতে চান তিনি।

সত্যিকারের নারী স্বাধীনতার জীবন্ত উদাহরণ এরকম যমুনা দেবীরা ছড়িয়ে আছে আমাদের আশেপাশে, গ্রামে গঞ্জে, অজানা কাহিনী নিয়ে, নিজেদের অসামান্য কর্ম দক্ষতা নিয়ে।