বঙ্গদেশ ডেস্ক: সদ্য দেশ স্বাধীনতা লাভ করছে। জনজীবনও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে। সারাদেশেই সার্কাস জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কলকাতায় তখন জনপ্রিয় সার্কাস। এমন সময় হৈচৈ ওঠে রেবা রক্ষিত-কে নিয়ে। সবার মনে তখন একটাই কৌতুহল,কে এই বিস্ময় কন্যা? যাঁর বুকে উপর হেঁটে যায় এক পূর্ণবয়স্ক হাতি। সেই রোমহর্ষক দৃশ্য দেখে হাততালিতে ফেটে পড়ত কলকাতার সার্কাস।
ছোট থেকেই সাঁতার,খেলাধূলা, যোগচর্চায় ছিল রেবার আগ্রহ ছিল। স্কুলে পড়ার সময় কুমিল্লা থেকে স্বপরিবারে চলে আসেন কলকাতায়। যোগ দেন শম্ভু মল্লিকের ‘জাতীয় ক্রীড়া ও শক্তি সংঘ’ -এ। পরিবারের আপত্তি ছিল মেয়ের যোগচর্চায়। কিন্তু রেবার এক রোখা মন সে বাধা মানেনি। যোগচর্চার সাথে রাইফেল চালানোর শিক্ষা নিয়েছিলেন।
রেবার এই জেদ ও অদম্য ইচ্ছা দেখে বিষ্টু ঘোষ তাঁকে ডেকে পাঠান। বিষ্টুবাবুর তত্বাবধানে আসন ও যোগর্চচা শুরু হয় রেবার। সেখান থেকে বুকের উপর হাতি তোলার কৌশল রপ্ত করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই যোগ দেন সার্কাসে। শুধু হাতি নয় চলন্ত মোটরসাইকেল উঠে যেত রেবার বুকে। সেই দৃশ্য দেখতে সব শো-গুলো তখন হাউসফুল।
১৯৫৪ থেকে ১৯৬২ টানা আট বছর ধরে গ্রেট বম্বে সার্কাসের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছিলেন রেবা রক্ষিত। জিমন্যাস্টিক, যোগাসনের পাশাপাশি হাতির খেলা হয়ে উঠেছিল দর্শকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। রেবার বুকের ওপর পেতে দেওয়া হত কাঠের তক্তা, তার ওপর দিয়ে হেঁটে যেত ৫০-৬০ মন ওজনের সুবিশাল হাতি।
রেবার কেরিয়ার শেষ করেন ইন্টারন্যাশানাল সার্কাসের হয়ে। ভারতসরকার তাঁকে সম্মানিত করেছিল পদ্মশ্রী পুরস্কারে। তাঁর এই জ্ঞান তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। যা আজও অনেক বাঙালি মধ্যবিত্ত মেয়েদের অনুপ্রেরণা।