বঙ্গদেশ বিশেষ প্রতিবেদন: সম্প্রতি কিছু সংগঠন প্রচার করছে পশ্চিমবঙ্গ ভাষার ভিত্তিতে গঠিত রাজ্য। যা সর্বৈব মিথ্যা। স্বাধীন ভারতে প্রথম ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যগঠন সংক্রান্ত আলোচনার জন্য ১৯৪৮ সালে এস কে ধর কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৪৮ সালেই আর একটি কমিটি গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং জওহরলাল নেহরু। কমিটির নাম ‘জেভিপি কমিটি’
জে= জওহরলাল
ভি= বল্লভ ভাই প্যাটেল (পটেল)
পি= পট্টভি সীতারামাইয়া।
ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠন করা নিয়ে এই কমিটি অস্বীকৃত হয়। এর পর ১৯৫৩ সালে ‘ফজল আলি কমিশন’ (রাজ্য পুনর্গঠন কমিটি) গঠন করা হয়। এই কমিশন প্রথম ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৫৬ সালে রাজ্য পুনর্গঠন আইন গঠিত হয়। মূলত ১৯৫৩ সালের পর ভারতে বেশ কয়েকটি রাজ্য ভাষার ভিত্তিতে গঠিত হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ তার একটি।
ভাষা নিয়ে এইসব ঘটার আগেই আমাদের পশ্চিমবঙ্গের জন্ম হয়ে গেছে ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট। যদিও স্বাধীনতার আগেই ২০ জুন ( অনেকের মতে ২২জুন) পশ্চিমবঙ্গ প্রস্তাবের স্বীকৃতি মিলেছিল। এখানে প্রশ্ন উঠবে তাহলে কিসের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ গঠিত হয়েছিল? সহজ উত্তর, যে ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়েছিল। অর্থাৎ দ্বিজাতিতত্ত্ব বা ধর্মের ভিত্তিতে। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তি এগোলে স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি হিন্দুর অধিকার স্বীকৃত হত। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ভাষার ভিত্তিতে গঠিত রাজ্য। এর উদ্দেশ্য? রাজ্যে ২৫ শতাংশ বাংলাভাষী মুসলিমদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এটি করতে গিয়েই একশ্রেনির বাঙালি ও তাদের সংগঠন লক্ষ লক্ষ হিন্দু বাঙালির দুয়ারে কাঁটা ফেলতে চাইছেন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকেই এই সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন। অনেকের মতে বাঙালির বন্ধু রূপে আত্মপ্রকাশ করা এই সংগঠনগুলি উগ্রবাদী সংগঠন জামাতের টাকায় চলে। এবার যদি এদের প্রশ্ন করেন ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিমবঙ্গের ভাষা এক ছিল। তাহলে ভাষার ভিত্তিতে পূর্বপাকিস্তান ও পশ্চিমবঙ্গ ভাগ হল কি ভাবে? তার উত্তর এই সংগঠনের কেউ দেবেন না।